পিরিয়ডে কী খাবেন, কী খাবেন না

পিরিয়ডে কী খাবেন, কী খাবেন না

পিরিয়ডের সময়টা সব মহিলার কাছেই বেশ চ্যালেঞ্জিং। অনেকেই এই সময় বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার মুখে পড়েন। পেট ব্যাথা, মাথা ব্যথা, বমি বমি ভাব, ক্লান্তি, মেজাজ পরিবর্তন, ডায়রিয়া ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয় অনেকের। এই সমস‌্যাগুলি কমাতে সাহায‌্য করে কিছু খাবার, তেমনই কিছু খাবার আর সমস‌্যা বাড়িয়ে তোলে। এগুলি এড়িয়ে চলতে হবে। সে কারণে একটি ডায়েট তালিকা তৈরি করতে হবে, যেখানে কিছু উপকারী খাবার যোগ করতে হবে এবং অপকারী খাবারগুলি বর্জন করতে হবে।

কী খাবেন :

জল : প্রতিদিনই পর্যাপ্ত জল পান করা প্রয়োজন। তবে পিরিয়ড চলাকালীন এটি বিশেষভাবে প্রয়োজন। কারণ পিরিয়ডের সময় রক্তপাতের পাশাপাশি শরীর থেকে অনেক জল বেরিয়ে যায়। তাই এই সময় শরীরকে হাইড্রেটেড রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ডিহাইড্রেশন থেকে মাথাব্যথা হতে পারে।

আয়রন সমৃদ্ধ খাবার : পিরিয়ডের সময় শরীরে আয়রনের পরিমাণ কমে যেতে পারে। ফলে শরীরে আয়রনের ঘাটতি দেখা দেয়। সে কারণে শরীর ব্যাথা, ক্লান্তি, মাথা ঝিমঝিম করার মতো সমস্যা দেখা দেয়। তাই পিরিয়ড চলাকালীন খাদ্যতালিকায় অবশ্যই আয়রন সমৃদ্ধ খাবার রাখুন। খাদ‌্য তালিকায় থাকুক মাছ, মাংস, ডিম, কচুশাক, পুঁইশাক, ডাটাশাক, খেজুর, পাকা তেঁতুল, আমড়া ইত্যাদি। অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতা রোধে চর্বি ছাড়া রেড মিট খাওয়া যেতে পারে।

সবুজ শাকসবজি : পিরিয়ডের সময় খাদ‌্য তালিকায় ফাইবার জাতীয় খাবারও রাখতে হবে। কারণ ফাইবার জাতীয় খাবার অন্ত্রের চলাচল নিয়মিত রাখে এবং দেহের হজমশক্তি বাড়ায়। সবুজ শাকসবজিতে আয়রন ও ভিটামিন বি-র পাশাপাশি উচ্চমাত্রায় আঁশ থাকে, যা কি না হজমে সহায়তা করে। ভালোভাবে হজম হওয়া পিরিয়ডের সময় সুস্থ থাকার একটি অপরিহার্য শর্ত।

আদা : এক কাপ আদা চা পিরিয়ডের লক্ষণগুলোকে কমাতে সাহায্য করতে পারে। বমি বমি ভাব কমাতে আদা সাহায্য করে। তবে খুব বেশি আদা খাবেন না। দিনে ৪ গ্রামের বেশি আদা খেলে অম্বল ও পেটে ব্যাথা হতে পারে৷

ফল : হাইড্রেটেড থাকার জন্য জল সমৃদ্ধ ফল যেমন তরমুজ, শশা, আপেল, খাওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া, এ সময় ভিটামিন সি যুক্ত ফল শরীরের জন্য বেশি উপকারী। শরীরে আয়রনের যথাযথ শোষণ ও কার্যকারিতার জন্য ভিটামিন সি অত‌্যন্ত প্রয়োজন। খুব সহজলভ‌্য পেয়ারা, আমড়া, আমলকি, লেবু, কমলা ইত্যাদিতে প্রচুর ভিটামিন সি পাওয়া যায়। পিরিয়ডের সময় অনেকের মিষ্টি খাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়৷ তাই মিষ্টি ফল খাওয়া যেতে পারে। কিন্তু যাতে অতিরিক্ত মিষ্টি খাওয়ার ফলে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যাওয়া এড়ানো যায়। পাকা কলা পটাশিয়াম ও ভিটামিনের খুব ভালো একটি উৎস, যা পিরিয়ডের সময় খাদ‌্য তালিকায় অত্যন্ত জরুরি। কারণ এটি আপনার বিষণ্নতা দূর করতে সাহায্য করবে।

ডার্ক চকলেট : ডার্ক চকলেট আয়রন এবং ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ। তাই পিরিয়ডের সময় আয়রনের ঘাটতি দূর করতে ডার্ক চকলেটও খাওয়া যেতে পারে। ডার্ক চকলেট আয়রন এবং ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ।

দই : অনেক মহিলারই পিরিয়ডের আগে বা পরে ইস্ট ইনফেকশন হয়। এক্ষেত্রে দইয়ের মতো প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া প্রয়োজন।

এ ছাড়াও, পিরিয়ডের সময় খাদ্যতালিকায় পর্যাপ্ত প্রোটিন ও ক্যালশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার রাখতে হবে। এই সময় ডাল, ডিম, মাছ, মাংস ইত্যাদি প্রোটিন জাতীয় খাবার খান। প্রোটিন শরীরে ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করে এবং মিষ্টিজাতীয় খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমায়। ভিটামিন বি ১২ ও বি ৬ জাতীয় খাবার যেমন ব্রোকলি, কর্ন, ডিম, আখরোট, চিয়া বীজ ইত্যাদি খেতে পারেন। এগুলো পিরিয়ডের সময় মেজাজ পরিবর্তন রোধ করতে সাহায্য করবে৷

কী খাবেন না :

পিরিয়ডের সময় অতিরিক্ত চিনি ও লবণাক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিৎ। এ ছাড়া প্রক্রিয়াজাত খাবার, সফট ড্রিঙ্কস, চা বা কফি, অতিরিক্ত তেল-মশলাদার খাবার এবং অ্যালকোহল এড়িয়ে চলতে হবে।

(কেবলমাত্র সচেতনতা বৃদ্ধির জন‌্য ধারণা দেওয়ার হেতু। সব সমস্য‌ায় চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করুন)

Post a Comment

أحدث أقدم