পিরিয়ড বা মাসিক প্রতিটি নারীর জীবন ও শরীরে অতি স্বাভাবিক একটি পর্ব। তবু, এ বিষয়ে সচেতনতার অভাবে নানা ভীতি জন্মায়। সেই ভীতি ও আশঙ্কা ভিন্ন বয়সে ভিন্ন হতে পারে। যা থেকে মানসিক অসুস্থতা আসতে পারে। এখানে সেই ভীতি কাটাতে পিরিয়ড নিয়ে নয়টি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরা হল।
ভয় বা উদ্বেগ থাকলেও প্রথম পিয়িয়ড আনন্দের সঙ্গে উদযাপন করুন। প্রতিটি মেয়ের জন্য, এটি নারীত্বে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। এই সময়ে পরিবার ও বন্ধুদের সহানুভূতি পেলে তারা সত্যিই উপকৃত হবে। সদ্য কৈশোরে পা রাখা অনেক মেয়েরই পিরিয়ড সম্পর্কে কোনও স্বচ্ছ্ব ধারণা থাকে না। সমবয়সী কিশোরদের তো নয়ই। কাজেই কোএডুকেশন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এই নিয়ে পড়ুয়াদের মধ্যে এমন ভুল বোঝাবুঝি ঘটে থাকে, তা কারও কারও ক্ষেত্রে পুরো জীবনেই একটা খারাপ অভিজ্ঞতা হয়ে থেকে যায়। তবে পরিবারে বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ ব্যাপারে স্বাস্থ্যকর আলোচনা তাদের আত্মবিশ্বাসী করে তুবে।
পিরিয়ডের দিনগুলিতে বা তার আগে পড়ে কিছু পরিচ্ছন্নতা মেনে না চললে স্বাস্থে্য ঝুঁকি দেখা দেওয়া স্বাভাবিক। এটি প্রজনন এবং মূত্রনালীর সংক্রমণের কারণ। জল ব্যবহার এবং নিরাপদ কম খরচের প্যাড সহ ব্যক্তিগত সুবিধা প্রদান এই ধরনের রোগ কমাতে পারে।
প্রতিবন্ধী এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন কিশোরী এবং মহিলারা পিরিয়ডের সময় তাঁদের স্বাস্থ্যবিধির ক্ষেত্রে অতিরিক্ত চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হন। এ সময় পরিজন ও প্রতিষ্ঠানকে তাদের সমস্যার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখতে হবে। যেমন প্রয়োজনীয় জলের চাহিদা, বিশেষ ধরনের টয়লেট ইত্যাদি।
অনেক মহিলাই তাদের পিরিয়ডের দিনগুলিতে প্রয়োজনীয় সামগ্রী, যেমন স্যানিটারি প্যাড, ট্যাম্পন ইত্যাদি হাতের কাছে পান না। বিশেষ করে প্রাকৃতিক বিপর্যয়, যুদ্ধ বা সংঘর্ষের সময়। প্রসঙ্গত,
জরুরী পরিস্থিতিতে ‘ইউনিসেফ’ মহিলদের জন্য কিট প্রদান করে, যার মধ্যে থাকে স্যানিটারি প্যাড, একটি টর্চলাইট এবং টয়লেট ব্যবহার করার সময় ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য বাঁশি। প্রতিটি সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এই পদ্ধতি অনুসরণ করা উচিত এবং সেই মতো প্রস্তুত থাকা উচিত।
বিশ্বব্যাপী ২.৩ বিলিয়ন মানুষের মৌলিক স্যানিটেশন পরিষেবার অভাব রয়েছে এবং স্বল্পোন্নত দেশগুলিতে জনসংখ্যার মাত্র ২৭ শতাংশের বাড়িতে জল এবং সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার সুবিধা রয়েছে। বাড়িতে পিরিয়ডের সময় মহিলাদের এবং কিশোরী মেয়েদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ যাদের বাড়িতে এই মৌলিক সুবিধাগুলি নেই। নিম্ন আয়ের দেশগুলির প্রায় অর্ধেক স্কুলে পর্যাপ্ত পানীয় জল, স্যানিটেশন এবং স্বাস্থ্যবিধির অভাব রয়েছে যা ছাত্রী এবং শিক্ষিকাদের পিরিয়ডের দিনগুলিক জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অপর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধাগুলি স্কুলে মেয়েদের অভিজ্ঞতাকে প্রভাবিত করতে পারে, যার ফলে তারা তাদের পিরিয়ডের সময় স্কুল ছুটি করতে পারে। সমস্ত স্কুলে বয়ঃসন্ধিকালের জন্য নলবাহিত পরিশ্রুত জল, নিরাপদ এবং পরিষ্কার শৌচালয়ের ব্যবস্থা করা উচিত।
(কেবলমাত্র সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য ধারণা দেওয়ার হেতু। সব সমস্যায় চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করুন)
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন